Home » » সাইকো দ্যা রাফিয়ান (৩য় পর্ব)

সাইকো দ্যা রাফিয়ান (৩য় পর্ব)

সাইকো দ্যা রাফিয়ান (৩য় পর্ব)
লেখা> Abir Hasan Niloy (মি. ভূত)
...
নিলয়ের দিকে সবাই হা হয়েই তাকিয়ে আছে। পুলিশ অফিসার তারিন ভেবেছিল "নিলয় এবার আর ছাড়া পাবে না।" কিন্তু নিলয়ের হাবভাব দেখে মনে হচ্ছে কিছুই হয়নি। সবার সামনে যখন শহরের টাকাওয়ালা মেয়র মাহফুজ সাহেব নিলয়েক এতগুলো গালি দিল নিলয় তার কোনো প্রতিক্রিয়া দেখাইনি। 

নিলয় সিগারেটে কয়েকটান দিয়ে মাহফুজ সাহেবের দিকে শান্ত দৃষ্টিতে তাকিয়ে বলে..

- শুধু আপনার ছেলে না, এখানে সবাইকেই আমি মেরে ফেলবো।
- শালা, মা***** তোকে আমি এখানেই মারবো। 

মাহফুজ সাহেব নিলয়ের গালে চড় বসিয়ে দেয়। নিলয়ের উপরের ঠোঁটের কোণা ফেঁটে রক্ত বের হতে থাকে। সবাই কমবেশি মাহফুজ সাহেবকে বাধা দিতে থাকে। নিলয় মুচকি হাসতে থাকে। মাহফুজ বলে...

- দেখি, তোকে কে ছাড়াই এবার। তোর উপরে কে আছে দেখে নেবো।
- নিলয় কারো আন্ডারে চলে না মি.। নিলয়কে আটকেও রাথা যায় না। কেউ আমাকে ছাড়াতে আসবে না,বরং আপনি নিজেই আমাকে ছাড়বেন।
- তোকে তে আমি......

কথাটা শেষ করতে পারেনি মাহফুজ সাহেব। ওনার কোটের বুক পকেটে থাকা ফোনটা বেজে উঠল। উনি রিসিভ করেন। ওপাশ থেকে বলে...

- স্যার, আপনার ছেলে মেহেদি হসপিটালে নেই। (ডক্টর)
- নেই মানে? কি বলো? (মাহফুজ)
- কয়েকজন ছেলে এসে তাকে তুলে নিয়ে গেছে।
- কিহহহ?

নিলয় হাসতে থাকে। মাহফুজ সাহেব নিলয়ের দিকে তাকায়। উনি ঠিকই বুঝে গিয়েছে এটা কে করেছে। নিলয় চেয়ার ছেড়ে ওঠে দাঁড়ায়। বড় রকমের একটা হাই তুলে মাহফুজ সাহেবের দিকে এগিয়ে এসে বলে...

- নিলয়, কিছু পারুক আর না পারুক, মাস্তানিটা সে বেশ পারে। আমার সাথে ঠান্ডা মাথায় খেলতে আসবেন। রাফিয়ান জগতে যত বেশি ঠান্ডা হয়ে চলবেন ততই মজা, বুঝছেন স্যার?
- তোকে তো আমি দেখে...
- হেহেহে... আমাকে কত জনই তো দেখে নিল, আপনিও দেখুন। আর হা, চড়টা তোলা থাকলো। 
.
মাহফুজ সাহেকের কোর্টের কলার নেড়ে দিয়ে নিলয় থানা থেকে বের হতে থাকে। তারিন মাহফুজ সাহেবতে চিৎকার করে বলতে লাগল..

- স্যার ও তো চলে যাচ্ছে, আমি কি তাকে আটকাবো?

মাহফুজ সাহেব কোনো কথা বলে না। নিলয়ের বসা চেয়ারটা হাতে নিয়ে জোরে আঁছাড় মারে। তারপর থানা থেকে বের হয়। কিছুক্ষন পর মেহেদিকেও আগের জায়গাতে রেখে আসে মাসুম,অর্ক, সিয়াম আর আশরাফেরা।
.
নিলা কিছু বলছে না দেখে মিম বলে..

- এতদিন যা শুনেছি তাই সত্যি হল।
- কি শুনেছিস?
- তোর আর নিলর্ ভাইয়ের সম্পর্ক চলছিল আর এখনতো বিয়ে করে প্রমাণই করে দিলি ঘটনা সত্যি। তুই যে ভাব দেখাতি মনে হতো নিলর্ ভাইরে তুই সহ্যই করতে পারতিনা আর এখনতো…. হা হা হা…ভালোই লাগলো তবে বিয়ের দাওয়াতটা দিলেই পারতি। (মিম)

নিলা চুপ হয়ে যায়। কেনো যেনো মনে হচ্ছে তার সবকিছু গুলিয়ে যাচ্ছে। সে সবাইকে কোনো রকমে বুঝিয়ে বাড়ি পাঠিয়ে দেয়। এ দিকে নিলয় ফিরে আসতে সবেই অনেক খুশি। নিলয় সোজা বাড়িতে এসে মাসুমকে ডাকে। 

- তোকে যে নিলার মত করেই একটা ফেক আইডি খুলে কমেন্ট করতে বলেছিলাম সেটা করেছিস?
- হুম ভাইয়া করেছি। 
- ওকে যা। 
.
নিলা বিছানায় বসে কান্না করছে। নিলয় তাকে তুলে নিয়ে যাওয়াতে বিয়েটা এমনিতেই ভেঙে গেছে। তবে কেনো নিলয় এমন করলো সেটা নিলা ভাবতেই পারছে না। দরজা খুলে নিলার মা ভিতরে প্রবেশ করে। নিলা তাড়াতাড়ি চোখের পানি মুছে নেয়। নিলার মা বলে..

- মেহেদির বাবা তোর বাবাকে কল করে অনেক বাজে বাজে কথা শুনিয়েছে। সাথে এও বলেছে তুইনবাড়ি থেকে পালিয়ে গিয়ে বিয়ে করেছিস। আর মেহেদি তোর কারনেই হসপিটালে।

নিলা ওর মায়ের দিকে তাকায়। কখন যে নিলার মা নিকিতা বেগম কান্না করে দিয়েছে নিলা খেয়ালই করেনি। সবকিছুর জন্য দায়ী ঐ সাইকো নিলয়। নিকিতা বেগম আবার বলে...

- এই প্রথম তোর বাবাকে এতটা অপমানের স্বীকার হতে হল।
.
নিলা কিছু বলতে যেয়েও পারে না। এ দিকে নিলাকেও নিকিতা বেগম কিছু বলতে পারছে না। কারন নিলা তো আর ইচ্ছে করে পালায় যায়নি। নিলয় তো সব করেছে। আর এর আগেও নিলাকে রাস্তাঘাটে জ্বালাত নিলয়, সেসব নিলা বাড়িতে এসে বলত। নিকিতা বেগম উঠে চলে যায়। নিলা আবারো কান্না করে। নিজের তো সম্মান গেছে সাথে পরিবারের কোনো সম্মানই আর নেই।  আর এসব কিছু হয়েছে শুধু ঐ খারাপ পাগলটার জন্য। নিলা কখনই তাকে কোনদিন ক্ষমা করবে না।
.
নিলা এক মনে কাল থেকে আজ অবদি সবকিছু ভেবে নিল। ওর বাবার অপমানটা সে সহ্য করতে পারছে না। তাই নিলা হুট করেই সিদ্ধান্ত নিল নিজেকে সে মেরে ফেলবে। কারন নিজের জন্যই এতকিছু হয়েছে। যদি আমি না থাকি তাহলে পরে আর এমন কিছু হবে না। 
.
নিলা বিছানা থেকে ওঠে। চুপিসাড়ে নিকিতা বেগমের ঘরে যেয়ে অনেকগুলো ঘুমের ঔষধ নিয়ে আসে নিলা। দরজা ভিতর থেকে ভালোমত আটকে অনেকগুলো ঘুমের ঔষধ পরপর খেয়ে নিল। বিছানায় বসে নিলয়কে কল করল নিলা।

নিলয় সিগারেট জ্বালিয়ে কয়েকটান দিতেই ফোনটা বেজে ওঠে। তাকিয়ে দেখে নিলার ফোন। অনেকটা অবাক হয়। কারন নিলা সচারচার নিলয়কে কখনো কল দেয়নি। নিলয় সাথে সাথেই রিসিভ করে বলে...

- নিলা, তুমি আমাকে ফোন দিয়েছ। আমার তো বিশ্বাসই হচ্ছেনা?
- জীবনের প্রথম ও শেষবারের মত ফোন দিলাম। কি ভেবেছিলেন আমি আপনার হাতের পুতুল যখন যেভাবে খুশি চালাবেন আর আমি চলব? আমার জীবনটা শেষ করেও শান্তি হয়নি এখন আমার পরিবারটা শেষ করার জন্য লেগেছেন। এইসব কিছুর জন্য তো আমিই দায়ী তাইনা? আমি না থাকলে তো আর এসব কিছু হত না আর ভবিষ্যতেও কিছু হবেনা।
- এসব কি বলছ তুমি?আমিতো….
- আপনার কোন কথা শুনার ইচ্ছে আমার নাই।আমি বেঁচে থাকলেই যত ঝামেলা মরে গেলেতো আর হবেনা। আমার সুন্দর জীবনটা আপনি নষ্ট করলেন। কত আশা ছিল সব আজ শেষ। আপনি যা করেছেন তারপর তো আমার আর কিছুই বাকি রইলনা। শুধু আপনার জন্য আজ আমার বাবাকে মানুষ এতগুলো কথা শুনিয়েছে বলেছে আমার পুরো পরিবারই নাকি খারাপ। আর এসবকিছুতো আপনি আমার জন্য করেছেন তাইনা? আজকের পর থেকে আর আমার পরিবারকে অপমানিত হতে হবেনা।সবকিছুর মূল তো আমি তাই স্থায়ী একটা সমাধানের ব্যবস্থাও আমি নিজেই বের করেছি।যদিও একটু দেরী হয়ে গেছে কিন্তু ব্যাপার না আর দেরী করবনা।
- কি সব বলছো?আর এভাবে কেন কথা বলছ? কি হয়েছে তোমার? কন্ঠ এমন লাগছে কেন?
- স্থায়ী সমাধান বের করেছি আর আমার কিছুই হয়নি। এতদিন ঠিক ছিলাম না আমি। এখন ঠিক আছি। একটা অনুরোধ করার জন্য ফোন দিয়েছি যদিও জানি কাজ হবেনা তবুও শেষ ইচ্ছা বলতে পারেন। আমার অবর্তমানে দয়াকরে আমার পরিবারটাকে আর জ্বালাবেন না। মেহেদি বা তাদের পরিবারকেও জ্বালাবেন না। তাদেরতো কোন দোষ নেই, দোষতো আমার। কারন আমি এই পৃথিবীতে এখনও রয়েছি তবে চিন্তা করবেন নানা আর কিছুক্ষন মাত্র তারপর সব ঝামেলা শেষ।
.
নিলয় বেশ উৎকণ্ঠা নিয়ে বাড়ি থেকে দৌড়ে বের হয়। সাথে মাসুম, সিয়াম, আশরাফ আর অর্কও থাকে। নিলয় ফোনে নিলাকে উত্তেজিত হয়ে বলতে থাকে..

- নিলা কি হয়েছে? তোমার কন্ঠ এমন কেন লাগছে? আর কিসব বলছ তুমি নিলা?এই কথা বলছনা কেন? নিলা,এই নিলা? তুমি আমার কথা শুনতে পাচ্ছো?
.
নিলা ফোনটা টেবিলে রেখে বিছানায় আসতেই কেমন যেন অন্ধকার হতে থাকে সব। মাথা খুব ব্যাথা করতে থাকে। চোখ মেলে তাকাতে পারছেনা। তারপর আর মনে নেই কিছু ওর।
.
 চোখ মেলে তাকিয়ে দেখে নিলা হাসপাতালের বেডে শুয়ে আছে। চোখ খুলতেও তার কেমন যেন কষ্ট হতে থাকে? কিছু সময় নিয়ে চোখ দুটো ভালোভাবে খুলে দেখে নিলয় তার পাশে বসে কোন একটা কাগজ দেখছে আর নার্সের সাথে কথা বলছে। নিলা আরো ভালো করে দেখার চেষ্টা করলো তার পরিবারের কেউ আছে নাকি। কিন্তু সে কাউকেই দেখছে না।

যে লোকটার হাত থেকে নিলা মুক্তি পাবার জন্য নিজের জীবনটাই ত্যাগ করতে যাচ্ছিল, চোখ খোলার পর তাকে দেখে নিলা অনেকখানি অবাক হয়। নার্স নিলাকে চোখ মেলা অবস্থায় প্রথম দেখল আর খুব খুশি হয়ে বলে উঠল

- ভাই দেখুন ভাবির জ্ঞান ফিরেছে।
.
নিলয় কাগজটা নার্সের হাতে দিয়ে প্রায় চিৎকার দিয়ে নিলার দিকে তাকায়। নিলা নিলয়ের হাবভাব দেখে অবাক চোখে তাকায়। নিলয় একবার নিলার দিকে তাকায় আরেকবার রুমের চারপাশ কেমন ছুটোছুটি করে। আবার দৌড়ে নিলার দিকে ফিরে আসে। নার্স ও নিলা নিলয়ের এমন কান্ড দেখে হা হয়েই তাকিয়ে আছে। নিলয় যে পাগল তাতে কারো সন্দেহ নেই। বেশ কিছু সময় নিলয় পাগলামো আচরন করে খুব স্বাভাবিক হয়েননিলাকে বলে..

- এখন তোমার কেমন লাগছে?এই মেয়ে তুমি এমন একটা কাজ কিভাবে করলে?তুমি অসুস্থ তাই বেঁচে গেলে নয়ত আগে একটা ঠাস করে চড় দিয়ে পরে কথা বলতাম। মরে যাওয়ার খুব শখ তোমার তাইনা?জীবনে যদি আর কোনদিন এমন কিছু করেছ সত্যি সত্যি সেদিন তোমাকে মেরে পরে আমিও মরব। কি ভেবেছিলে, এত সহজে আমার হাত থেকে তুমি মুক্তি পাবে? ভুল।যতদিন আমি বেঁচে আছি ততদিন তোমাকেও বেঁচে থাকতে হবে। আর আমার মৃত্যুর পর সে অন্য কথা। বললে না তো,এখন কেমন লাগছে তোমার? কি ব্যাপার কথা বলছো না কেন?
.
নিলয় গড়গড় করে কথা গুলো বলতে থাকে। নিলা প্রচন্ড বিরক্তি নিয়ে নিলয়ের দিকে তাকায়। নিলা কোনো প্রকার উত্তর না দিয়ে জিজ্ঞাসা করে..

- সিস্টার আমার বাবা-মা কেউ আসেনি, তারা কোথায়?
- তারা বাহিরেই আছে। নার্স আগে ডাক্তার সায়ানকে এই সংবাদটা দেন আর তাকে বলুন একবার এসে সব দেখতে যদি সবঠিক থাকে তবে বাহিরে যারা আছে তাদের ভিতরে নিয়ে আসবেন। (নিলয়)
- আচ্ছা ভাই। আপনি ভাবির পাশে বসুন আমি এখনি ডক্টরকে নিয়ে আসছি।

নার্স চলে গেল। নিলয় সরাসরি নিলার দিকে তাকাল। নিলা সাথেই চোখ সরিয়ে নিল। নিলয় আরো কাছে সরে এসে নিলাকে দেখতে। নিলা চোখ বন্ধ করে চুপ হয়ে শুয়ে থাকে। একটু ডক্টর এসে, দেথেশুনে বলে..

- এখন কেমন লাগছে?
- জ্বী ভাল।
- বিয়ের একদিন না যেতেই নিলয়ের উপর কি বিষয়ে আপনার এত রাগ হল যে রাগের বশে নিজেকেই শেষ করতে যাচ্ছিলেন? আপনি জানেন এই একদিন আপনার স্বামী আপনার কাছ থেকে এক মিনিটের জন্যেও সরেনি। পুরোটা রাত জুড়ে আপনার পাশে পায়চারি করেছে,কতবার যে আমাকে ডেকে এনে বলেছে "দেখুন না ডক্টর ও চোখ খুলবে কখন? ভালো আছে কি না?" এত ভালোবাসে আপনার স্বামী আপনাকে।
- আমার স্বামী? (নিলা)
- জ্বী। মি. নিলয় যে আপনাকে কতটা ভালবাসে তা উনাকে দেখে বুঝেছি। আচ্ছা পরে এসব কথা বলা যাবে এখন রেস্ট নিন।
- ডক্টর আমার বাবা-মা?
- নার্স উনাদের বল এখন ভেতরে আসতে পারেন। আর নিলয় সাহেব এবার আপনিও একটু চিন্তামুক্ত হোন এখন ভয়ের আর কিছুই নেই আর চাইলে কাল বাসায় নিয়ে যেতে পারেন।
.
নিলয় চুপ হয়ে বসে থাকে নিলার দিকে তাকিয়ে। নিলা একবার আড়চোখে নিলয়ের দিকে তাকিয়ে চোখ সরিয়ে নেয়। ডক্টর চলে যাবে তখনি নিলয় বলে..

- সরি, ডক্টর। তখন আপনার সাথে ঐভাবে কথা বলার জন্য। আসলে আমার মাথা ঠিক ছিলনা তাই।
- আরে এসবের দরকার নেই। আমি বুঝতে পারছি তখন আপনার মনের উপর দিয়ে কি যাচ্ছিল। তবে উনার দিকে একটু খেয়াল রাখবেন উনি মনে হয় কোন বিষয়ে একটু বেশিই হতাশায় ভুগছে।
- জ্বী ডক্টর। ধন্যবাদ।
.
নিলয় আর কিছু না বলে ডক্টরের সাথে বের হয়ে যায়। নিলার মা, বাবা, বান্ধবি, নানা,নানু অনেক আত্বীয় কেবিনে ঢোকে। নিলয় বের হয়ে আসতেই ফোন বেজে ওঠে। সাকিব ভাইয়ের ফোন..

- হুমম বলো ভাই। (নিলয়)
- মেহেদির কথা মনে আছে?
- হুমম। কেনো?
- শুনলাম, ও তোমাকে মারার জন্য লোক আর অস্ত্র জোগাড় করেছে। আর ওর বাপ আমাকে নির্বাচন করতে দিচ্ছে না।
- হিহিহি..  আচ্ছা, ঠিক আছে। 
- নাহ ঠিক নেই, মাহফুজ সাহেবকে তুমি তুলে আনতে পারবে না। 
- হাহাহা... সাকিব ভাই, তুমি জানো না, এই নিলয় কেবল বুলেট নিয়ে খেলে না, পাগল হলেও মাইন্ড গেম খেলাটা আমার নেশা। কিন্তু বুঝতে পারছি না, তুমি কেনো তোমার বোনকেই আমার সাথে এভাবে জড়িয়ে দিলে। এখন ওর সাথে ভালোবাসার অভিনয় করতে যেয়ে সত্যিকারের ভালোবেসে ফেলেছি।
- তাহলে বিয়ে করে নাও। আমি ব্যবস্থা করছি।
- কি করে? সে তো জানেই না তুমি....
- নিলয় মাইন্ড গেমটা না হয় আমাকেই করতে দাও। তুমি মাইন্ড গেম খেলো মাস্তানিতে, আর আমি রাজনীতিতে। এবার না হয় সম্পর্কের সাথেই করি।
.
নিলয় ফোনটা কেটে দেয়। দীর্ঘ এক নিঃশ্বাস ছাড়ে ও। ছোট থেকেই নিলয়কে সবাই ব্যবহার করেছে। তাকে কেউ ভালোবাসেনি। মাথাটা রাগের কারনেই বিগড়ে গিয়েছে ছোট বেলাতে। তখন থেকেই সে ছন্নছাড়া। তাই অন্যের ব্যবহার্য কাজে নিলয় এগিয়ে। আর এখানে তো সম্পর্কটাও নিলয়কে ব্যবহার করতে নিয়ে আসা হয়েছে। 

সাকিব ভাই জানে নিলয় একটা চপ লেভেলের মাস্তান। তবুও কেনো সে তার বোনকে এভাবে ওর হাতে তুলে দিয়েছে সেটাই বোঝা মুশকিল হয়ে যাচ্ছে নিলয়ের। অবশ্য মনের অনুভুতিগুলো সে অনেক আগেই নেহা নামের কাউকে দিয়েছিল। তবুও নিলাকে দেখার পর কেমন যেন হয়ে যায় নিলয়।
.
মা,বাবা, সবাই নিলাকে দেখতে ভিতরে প্রবেশ করে। নিলা বেডে শুয়ে দরজার দিকে মুখ করে থাকে। নিকিতা বেগম দৌড়ে নিলাকে এসে জড়িয়েে ধরে কাঁদতে থাকে। নিলাও কেঁদে দেয়। সবাই নিলাকে দেখে কান্না করে। কাঁদতে কাঁদতে নিকিতা বেগম বলেন..

- কেন আমাদের এত বড় শাস্তি দিতে যাচ্ছিলি মা। আর কিভাবে তুই এমন একটা কাজ করার কথা চিন্তা করেছিলি?একবার ভেবে দেখেছিস তো কিছু হলে আমাদের কি হত?
- আমাকে ক্ষমা করো মা। তখন আমি এছাড়া আর কোন পথ খুজে পাচ্ছিলাম না।
- আর যদি কোনদিন এমন কিছু করার কথা ভাবিস তবে খুব খারাপ হয়ে যাবে।আমি তোরে কোনদিন ক্ষমা করবনা। (নিলার বাবা, শিমুল চৌধুরি)
- সরি,বাবা। আসলে আমার জন্য তোমাদের এত অপমানিত হতে দেখে আমি আর সহ্য করতে পারিনি।
.
আরো অনেকটা সময় সবাই নিলাকে নানাভাবে আদর, ভালোবাসা মূলক অনেক কথা বলল। একসময় নার্স এসে সবাইকে চলে যেতে বলে। কেবল নিকিতা বেগম থেকে যায়। নিলা তার মাকে বলে...

- মা এই খারাপ লোকটা এখানে কিভাবে আর উনাকে কে বলেছে এসব? উনি কেন আমার পাশে বসেছিল? মা ডাক্তার আমার কেন বলেছে উনি আমার স্বামী? কি হল মা কথা বলছো না কেন?
- একটু সুস্থ হ, তোকে সব বলছি। 
তারপর...

(waiting for next part)

0 Comments:

Post a Comment

GENRES

Subscribe Us

Facebook

 
Created By SoraTemplates | Distributed By Gooyaabi Themes